হুমায়ূন ফরীদির জীবনী

হুমায়ূন ফরীদির বয়স,ওজন,উচ্চতা, পারিবারিক ও বৈবাহিক অবস্থা

মঞ্চ থেকে চলচ্চিত্র অভিনয়ের সবখানে তিনি রাজত্ব করেছেন দুর্দান্ত প্রতাপে। কয়েক দশক অভিনয়ে তিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন নিজের অভিনয় দিয়ে।ভাঙ্গনের শব্দ শুনি সেরাজ তালুকদার, ‘সংশপ্তক কানকাটা রমজান কিংবাশ্যামল ছায়া একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মানুষ মনে রাখবে অনেক দিন। নিজেকে কিংবদন্তিতে পরিণত করেছেন, তিনি হুমায়ুন ফরীদি। আজ গুণী অভিনেতার জন্মদিন। জাগতিক ভ্রমণে থাকলে আজ তার বয়স হতো ৭১। কিংবদন্তির জন্মদিনে এই বিশেষ আয়োজন। 

পাগলা ফরীদি

 

১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মেছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। তার বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম, মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে ফরীদি ছিলেন দ্বিতীয়। হুমায়ুন ফরীদির প্রকৃত নাম হুমায়ুন কামরুল ইসলাম। ছোটবেলায় ছন্নছাড়া স্বভাবের জন্য ফরীদিকে ‘পাগলা’, ‘সম্রাট’, ‘গৌতম’Ñ এমন নানা নামে ডাকা হতো।

মেধাবী ফরীদি

 

জন্ম ঢাকায় হলেও শৈশব-কৈশোরে স্থায়ীভাবে তার থাকা হয়নি ঢাকায়। বাবার চাকরির সুবাদে ঘুরতে হয়েছে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ আরও অনেক জেলায়। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেছেন বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্কুলে। মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুল পাস দিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করেন ১৯৭০ সালে। এরপর একই বছর স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়ন বিভাগে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার পর অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে অনার্স সম্পন্ন করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরীদি

 

সময়টা উত্তাল একাত্তর। দেশে চলছে স্বাধীনতা অর্জনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক কেমিস্ট্রির ছাত্র। দেশের এমন ক্রান্তিকালে হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। পড়াশোনা ছেড়ে রাইফেল কাঁধে তুলে নেমে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। বীরের মতো লড়াই করেন পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে। তবে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে কখনও বাড়তি সুবিধা নেননি তিনি। আমৃত্যু দেশকে ভালোবেসেছেন, শিল্পের চর্চা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।

মঞ্চের ফরীদি

 

মঞ্চ দিয়েই শুরু তার অভিনয়ের পথচলা। তবে ফরীদি অভিনীত প্রথম মঞ্চনাটক কিশোরগঞ্জে মহল্লার নাটক দিয়ে, ১৯৬৪ সালে। প্রথম মঞ্চনাটক নির্দেশনা দেন স্কুলজীবনে ‘ভূত’। ১৯৭৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নাট্যোৎসব আয়োজনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দিনগুলোতেই ফরীদি সম্পৃক্ত হন ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে। নাট্যচর্চার পুরোধা ব্যক্তিত্ব নাট্যকার সেলিম আল দীনের কাছ থেকেও নাট্যতত্ত্বে দীক্ষা নেন হুমায়ুন ফরীদি। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সদস্য হিসেবে অভিনয়ের আলো ছড়িয়ে বেড়ান সারা দেশে। যদিও এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃনাট্য প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। এখানে তিনি ‘আত্মস্থ ও হিরণ্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক লেখেন, নির্দেশনা দেন এবং অভিনয় করেন। এই নাটক পাঁচটি নাটকের মধ্যে সেরা নির্বাচিত হয় বিচারকদের কাছে। এ নাটকের সুবাদে পরিচয় ঘটে ঢাকা থিয়েটারের নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর সঙ্গে। ডাক পান ঢাকা থিয়েটারে। সেখান থেকেই বিকশিত হয় তার অভিনয়ের দ্যুতি। মঞ্চ কাঁপিয়েছিলেন ফরীদি। শকুন্তলার পর ‘ফণীমনসা’, ‘কীর্তনখোলা’, ‘কেরামতমঙ্গল’, ‘মুনতাসীর ফ্যান্টাসি’ এবং ১৯৯০ সালে ‘ভূত’ দিয়ে শেষ হয় হুমায়ুন ফরীদির ঢাকা থিয়েটার জীবন।

টিভির ফরীদি

 

মূলত বন্ধু-অভিনেতা আফজাল হোসেনের সাহস ও উৎসাহে হুমায়ুন ফরীদির টেলিভিশনযাত্রা শুরু হয়। আফজাল হোসেন বন্ধুর কথা ভেবে অনেকগুলো নাটক লেখেন। তার টিভি অভিনেতা হিসেবে টেলিভিশনে অভিষেকটা ঘটে আতিকুল হক চৌধুরীর মাধ্যমে। ১৯৮০ সালে ‘নিখোঁজ সংবাদ’-এর মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিষিক্ত হন হুমায়ুন ফরীদি। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নীল নকশার সন্ধ্যায়’ ও ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ নাটকে অভিনয় করে তিনি তাক লাগিয়ে দেন। সেলিম আল দীনের রচনা এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর নির্দেশনায় ধারাবাহিক নাটক ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’ দিয়ে আলোচনায় আসেন ফরীদি। এখানে তার চরিত্রের নাম ছিল সেরাজ তালুকদার। এক সময় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত ‘সংশপ্তক’ নাটকে ‘কানকাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন তিনি।

ফরীদি অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছেÑ ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’, ‘বকুলপুর কতদূর’, ‘মহুয়ার মন’, ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘চানমিয়ার নেগেটিভ পজিটিভ’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘দুই ভাই’, ‘শীতের পাখি, ‘সংশপ্তক’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘সমুদ্রে গাঙচিল’, তিনি একজন’, ‘চন্দ্রগ্রস্ত’, ‘কাছের মানুষ’, ‘মোহনা’, ‘বিষকাঁটা’, ‘ভবের হাট’ ও ‘শৃঙ্খল’। তার অন্য নাটকগুলোর মধ্যে আছে, ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘প্রিয়জন নিবাস’। সর্বশেষ তিনি ‘তখন হেমন্ত’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটক পরিচালনা করেন এবং ‘পূর্ণ চাঁদের অপূর্ণতায়’ নামের একটি নাটকে অভিনয় কর

জন্ম শিক্ষাজীবন

 

হুমায়ূন ফরীদি ১৯৫২ সালের ২৯ মে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি ১৯৬৫ সালে পিতার চাকুরীর সুবাদে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। তার নাট্যঙ্গনের গুরু বাশার মাহমুদ। তখন নাট্যকার বাশার মাহমুদের শিল্পী নাট্যগোষ্ঠী নামের একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে ‘রত্ন’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি সর্বপ্রথম দর্শকদের সামনে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর এই সংগঠনের সদস্য হয়ে ‘টাকা আনা পাই’, ‘দায়ী কে’, ‘সমাপ্তি’, ‘অবিচার’সহ ৬টি মঞ্চ নাটকে অংশ নেন।

অবশেষে ১৯৬৮ সালে মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণের পর পিতার চাকুরীর সুবাদে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব-রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন। যদিও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় এবং শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের পর ফিরে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আল-বেরুনী হলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

হুমায়ূন ফরীদি (২৯ মে ১৯৫২ – ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা। তিনি মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে আগমন করেন। তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়। তিনি মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

জন্ম ২৯ মে ১৯৫২

চুয়ারিয়া, তুমুলিয়া, কালীগঞ্জ, গাজীপুর, বাংলাদেশ

মৃত্যু ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ (বয়স ৫৯)

ধানমন্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ

জাতীয়তা বাংলাদেশী
নাগরিকত্ব  বাংলাদেশ
শিক্ষা অর্থনীতি
মাতৃশিক্ষায়তন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
 
 
পেশা অভিনেতা
কর্মজীবন ১৯৮১–২০১২
দাম্পত্য সঙ্গী মিনু (বি. ১৯৮০; বিচ্ছেদ. ১৯৮৪)
সুবর্ণা মুস্তাফা (বি. ১৯৮৪; বিচ্ছেদ. ২০০৮)
সন্তান শারারাত ইসলাম দেবযানী (মেয়ে)
পিতামাতা এ টি এম নূরুল ইসলাম
বেগম ফরিদা ইসলাম
পুরস্কার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

কর্মজীবন

 

১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মূলতঃ এ উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।

ফরীদি ১৯৮৪ সালে তানভীর মোকাম্মেলের হুলিয়া স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে শেখ নিয়ামত আলীর দহন (১৯৮৫) চলচ্চিত্র দিয়ে। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত সংশপ্তক নাটকে ‘কানকাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন।

২০০৪ সালে ফরীদি দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, সেগুলো হল হুমায়ূন আহমেদের শ্যামল ছায়া ও তৌকীর আহমেদের জয়যাত্রা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই বছর তিনি মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

মঞ্চ

 

  • ত্রিরত্ন (প্রথম অভিনয়)
  • কিত্তনখোলা
  • মুন্তাসির ফ্যান্টাসি
  • কিরামত মঙ্গল (১৯৯০)
  • ধূর্ত উই

পুরস্কার স্বীকৃতি

 

  • ২০০৪: মাতৃত্ব চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
  • নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন।
  • ২০১৮: শিল্পকলায় একুশে পদক(মরণোত্তর)

চলচ্চিত্রের তালিকা

 

·       সন্ত্রাস

·       দহন

·       লড়াকু

·       দিনমজুর

·       বীর পুরুষ

·       বিশ্ব প্রেমিক

·       আজকের হিটলার

·       দুর্জয়

·       শাসন

·       আঞ্জুমান

·       আনন্দ অশ্রু

মায়ের অধিকার

·       আসামী বধু

·       একাত্তরের যীশু – মুক্তিযোদ্ধা

·       প্রাণের চেয়ে প্রিয় – বিল্লাত আলী

·       ভালোবাসি তোমাকে

·       কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি

·       প্রবেশ নিষেধ

·       ভণ্ড

·       “ঘাতক”

·       টাকার অহংকার

·       অধিকার চাই

·       ম্যাডাম ফুলি

·       মিথ্যার মৃত্যু

বিদ্রোহী চারিদিকে

·       মনে পড়ে তোমাকে

·       মাতৃত্ব

·       টাকা – আরমান চৌধুরী

·       ব্যাচেলর

·       জয়যাত্রা

·       শ্যামল ছায়া – মুক্তিযোদ্ধা

·       বিন্দুর ছেলে (২০০৬)

·       দূরত্ব

·       চেহারা

·       আহা! – কিসলু

·       কি যাদু করিলা – কামাল চেয়ারম্যান

·       মেহেরজান – খন্দকার

·       বাংলার বধূ

·       এক জবানের জমিদার হেরে গেলেন এইবার – জমিদার(শেষ চলচ্চিত্র)

টেলিভিশন

 

·       নিখোঁজ সংবাদ

·       হঠাৎ একদিন

·       পাথর সময়

·       সংশপ্তক

·       সমূদ্রে গাংচিল

·       কাছের মানুষ

·       মোহনা

·       নীল নকশাল সন্ধানে (১৯৮২)

·       দূরবীন দিয়ে দেখুন (১৯৮২)

·       ভাঙ্গনের শব্দ শুনি (১৯৮৩)

·       কোথাও কেউ নেই

·       তবুও প্রতীক্ষা (পরিচালক)

·       নৈবচ নৈবচ

·       সাত আসমানের সিঁড়ি

·       সেতু কাহিনী (১৯৯০)

·       ভবের হাট (২০০৭)

·       শৃঙ্খল (২০১০)

·       জহুরা

·       আবহাওয়ার পূর্বাভাস

·       প্রতিধ্বনি

·       গুপ্তধন

·       সেই চোখ

·       অক্টোপাস

·       বকুলপুর কত দূর

·       মানিক চোর

·       “আমাদের নুরুল হুদা” ৬০ তম পর্ব থেকে।

·       চন্দ্রগ্রস্থ (পরিচালক)

ব্যক্তিগত জীবন মৃত্যু

ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ূন ফরীদি দুবার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়ে করেন ১৯৮০’র দশকে। শারারাত ইসলাম দেবযানী নামের তার এক মেয়ে রয়েছে এ সংসারে। পরবর্তীতে অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফাকে বিয়ে করলেও ২০০৮ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে।

তিনি ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমন্ডিতে তার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। এর পূর্বে তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাকে ঢাকার মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসার পর তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। এই আঘাতেই তার মৃত্যু হয়

চলচ্চিত্রের ফরীদি

 

নব্বইয়ের গোড়া থেকেই হুমায়ুন ফরীদির বড় পর্দার জীবন শুরু হয়। বাণিজ্যিক আর বিকল্প ধারা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ছবি তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’। বাণিজ্যিক ছবির পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘সন্ত্রাস’, ‘দিনমজুর’, ‘বীরপুরুষ’ ও লড়াকু’ ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করেন। এরপরই দেশীয় চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্র পায় এক অন্য মাত্রা। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছিল যে এক সময় মানুষ নায়কের পরিবর্তে তাকে দেখার জন্যই প্রেক্ষাগৃহে যেত। শহীদুল ইসলাম খোকন ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘অপহরণ’, ‘দুঃসাহস’সহ ২৮টি ছবির মধ্যে ২৫টিতেই রাখেন ফরীদিকে। তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘সন্ত্রাস’, ‘বীরপুরুষ’, ‘দিনমজুর’, ‘লড়াকু, ‘দহন,’ ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’ (১৯৯৫), ‘আঞ্জুমান’ (১৯৯৫), ‘দুর্জয়’ (১৯৯৬), ‘বিচার হবে’ (১৯৯৬),‘মায়ের অধিকার’ (১৯৯৬), ‘আনন্দ অশ্রু’(১৯৯৭), ‘শুধু তুমি’ (১৯৯৭), ‘পালাবি কোথায়’, ‘একাত্তুরের যীশু’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘মিথ্যার মৃত্যু, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘ব্যাচেলর’ (২০০৪), ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪), ‘রূপকথার গল্প’ (২০০৬), ‘আহা!’ (২০০৭), ‘প্রিয়তমেষু’ (২০০৯) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

নেগেটিভ, পজেটিভ অর্থাৎ নায়ক-খলনায়ক দু-চরিত্রেই তিনি ছিলেন সাবলীল, এক কথায় ভার্সেটাইল। তার জনপ্রিয়তা এতটাই ছিল যে একসময় দর্শক তাকে দেখতেই হলে যেতেন। এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী খলনায়ক ছিলেন ফরীদি।

রোমান্টিক নিঃসঙ্গ ফরীদি

 

ফরীদি ছিলেন রোমান্টিক মানুষ। যৌবনের শুরুতে বেলি ফুলের মালা দিয়ে ফরিদপুরের মেয়ে মিনুকে বিয়ে করেছিলেন। তখন এ বিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ সংসারে তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। পরে তিনি ঘর বাঁধেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। শেষ জীবনটা তিনি অনেকটা নিঃসঙ্গতা নিয়েই কাটিয়েছেন। সেইসব দিনগুলোর অভিজ্ঞতা নিয়েই এক সাক্ষাৎকারে ফরীদি বলেছিলেন, ‘একা থাকা অনেক ভালো। কারণ একাকিত্ব কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না।’

অদেখা ভুবনে ফরীদি

 

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফাগুনের আগুনে বিষাদের কালো আভা ছড়িয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন অভিনয়ের কিংবদন্তি পুরুষ হুমায়ুন ফরীদি। কাঁদিয়েছিলেন কোটি ভক্তকে। জীবন্ত ফরীদি তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি নিজের হাতে না পেলেও, মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হুমায়ুন ফরীদির মেয়ের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।

দার্শনিক ফরীদি

 

হুমায়ুন ফরীদি একজন দার্শনিকও ছিলেন বটে। তার সংস্পর্শে যারা গিয়েছেন তারাই সেই সোনার মানুষটির দেখা পেয়েছেন। যিনি নানা দর্শনে নিজেকে সমৃদ্ধ করে রেখেছিলেন। মৃত্যু নিয়ে তিনি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘মৃত্যুর মতো এত স্নিগ্ধ, এত গভীর সুন্দর আর কিছু নেই। কারণ মৃত্যু অনিবার্য। তুমি যখন জন্মেছ, তখন মরতেই হবে। মৃত্যুর বিষয়টি মাথায় থাকলে কেউ পাপ করবে না। যেটা অনিবার্য, তাকে ভালোবাসাটাই শ্রেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যুকে ভয় পাওয়া মূর্খতা। জ্ঞানীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করো, গ্রহণ করো, বরণ করে নাও। তা হলে দেখবে জীবন কত সুন্দর।’ তার এসব কথার দর্শন আজও তার ভক্তরা অনুভব করেন। প্রেম, বিয়ে ও বিচ্ছেদ নিয়েও ফরীদির দর্শন তার অনুরাগীদের হৃদয় স্পর্শ করে যায়। সেসব দর্শন বুকপকেটে নিয়ে আজও ঘুরে বেড়ায় অনেকে।

অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের এই পোস্টটি “হুমায়ন ফরিদীর জীবনী পড়ার জন্য।এই পোস্টটি হুমায়ন ফরিদীর জীবনী কেমন লাগলো তা কমেন্টের মাধ্যমে জানান। আশা করি পোস্টটি আপনাদের কে তার সম্পর্কে অনেককিছু তথ্য জানতে সাহায্য করেছে।আমরা এই সমস্ত তথ্যগুলি অনেক রকম ভাবে ভালোভাবে অনুসন্ধান করে সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করি।যদি কোনো তথ্য ভুল মনে হয়ে থাকে তাহলে মন্তব্য ফর্মটি পূরণ করে আমাদেরকে শেয়ার করতে পারেন।এরকম আরো মানুষের জীবনী সম্পর্কে জানতে আমাদের এই সাইটটিকে info bd net এ ফলো করুন। ধন্যবাদ!

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *