দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শ্রদ্ধেয় অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। নাটকে অভিনয় করে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। তবে বিগত এক দশক ধরে রয়েছেন অভিনয়ের বাহিরে। রাজনীতিতে সরব হয়ে অভিনয়ের সঙ্গে তার এই দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আজ তার ৭৪তম জন্মদিন।
আসাদুজ্জামান নুরের জন্ম
নূর ১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর জলপাইগুড়ি জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী ও মাতা আমিনা বেগম। নূর পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আসাদুজ্জামান নূর (জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬) হলেন একজন বাংলাদেশী অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ। তিনি শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য দায়িত্বাধীন অধিকৃত কার্যালয় ১০ অক্টোবর ২০০১ পূর্বসূরী আহসান আহমেদ বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী কাজের মেয়াদ ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ – ৭ জানুয়ারি ২০১৯ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বসূরী হাসানুল হক ইনু উত্তরসূরী কে এম খালিদ বাবু ব্যক্তিগত বিবরণ জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬ (বয়স ৭৬) জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ জাতীয়তা বাংলাদেশী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দাম্পত্য সঙ্গী শাহীন আখতার মাতা আমিনা বেগম পিতা আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী বাসস্থান ঢাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেশা অভিনেতা উপস্থাপক রাজনীতিবিদ পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৮) ১৯৭২ সালে তার অভিনয় জীবন শুরু হয় মঞ্চদল “নাগরিক” নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে। এই নাট্যদলের ১৫টি নাটকে তিনি ৬০০ বারের বেশি অভিনয় করেছেন। এই দলের দুটি নাটকের নির্দেশনা প্রদান করেছেন, যার মধ্যে দেওয়ান গাজীর কিসসা বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। নূর ১১০টিরও বেশি টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। টেলিভিশনে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫), অয়োময় (১৯৮৮), কোথাও কেউ নেই (১৯৯০), আজ রবিবার (১৯৯৯) ও সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)। রেডিওতে প্রচারিত তার নাটকের সংখ্যা ৫০ এরও অধিক। টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)। সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এর সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
আসাদুজ্জামান নুরের কর্মজীবনঃ
১৯৭২ সালে বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক চিত্রালীতে কাজ করার মধ্যদিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন । ১৯৭৩ সালে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অধীনে একটি ছাপাখানায় ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত দূতাবাসের (বর্তমানে রাশিয়া) প্রেস রিলেশন অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ইস্ট এশিয়াটিক অ্যাডভারটাইজিং লিমিটেড এ (বর্তমানে এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি) সাধারণ ব্যবস্থাপক পদে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাষ্টি সদস্য, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য ও বাংলাদেশ রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। নব্বইয়ের দশকে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত কোথাও কেউ নেই নাটকে বাকের ভাই চরিত্রে অভিনয় করে দেশব্যাপী তুমূল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। দেশটিভিতে প্রচারিত “কে হতে চায় কোটিপতি” অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্বও পালন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির প্রাক্তন ব্যবস্থাপক ছিলেন ৷ নূরের অভিনয় জীবনের শুরু থিয়েটার থেকে। ১৯৭২ সাল থেকে তিনি নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত হন। সে সময়ে তিনি ‘চিত্রালী’র অভ্যর্থনাকারী ছিলেন এবং বিখ্যাত অভিনেতারদের সাক্ষাৎকার নিতে যেতেন। এভাবেই তিনি আলী জাকের এর সাথে দেখা করেন, যিনি নাগরিক সম্প্রদায়ের ছিলেন। প্রথমে দলটির একটি নাটকরের মহড়ায় গিয়ে দলটির অংশ হয়ে যান তিনি। প্রথমে নেপথ্যের কণ্ঠদান দিয়ে শুরু করেন। ‘তৈল সংকট’ নামক একটি নাটকের আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনীর মাত্র দু’দিন বাকি থাকা অবস্থায় এর প্রধান অভিনেতা আবুল হায়াত হঠাৎ আহত হয়ে পড়েছিলেন। নেপথ্যের কণ্ঠদানের কারণে নূর নাটকের প্রতিটি লাইনই জানতেন। আলী জাকের নূরকে আবুল হায়াতের চরিত্রটি করতে বলেন। এভাবেই তার অভিনয়ের শুরু। তিনি এই দলের ১৫টি নাটকে ৬০০ বারেরও বেশি অভিনয় করেছেন। তিনি এই দলের দুটি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন, যার মধ্যে দেওয়ান গাজীর কিসসা প্রায় তিন শতাধিকবার মঞ্চায়িত হয়ে সর্বোচ্চ প্রদর্শিত মঞ্চ নাটকের রেকর্ড গড়েছে। নূর এর প্রথম টেলিভিশনে অভিনীত নাটক ১৯৭৪ সালে ছিল রং এর ফানুশ, যার পরিচালক ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি মঞ্চের জন্য ব্রেখটেরে নাটকের বাংলা অনুবাদ, রবীন্দ্রনাথের তিনটি উপন্যাসের টিভি নাট্যরূপ এবং টিভির জন্য একটি মৌলিক নাটক রচনা করেছেন। এ মোর অহংকার ও দেওয়ান গাজীর কিসসা তার পুস্তাকাকারে প্রকাশিত নাটক। নিজস্ব পরিচালনায় তিনি ৫০টিরও বেশি বিজ্ঞাপনচিত্র ও ভিডিও ছবি নির্মাণ করেন।
একজন অমায়িক আসাদুজ্জামান
য়েছিলেন শুধু অভিনয়শিল্পী-আবৃত্তিকার; সেই জনপ্রিয়তায় ভর করে নামলেন রাজনীতিতে, সংসদ সদস্যের পর মন্ত্রীও হছেন। তিনি আসাদুজ্জামান নূর, পার করলেন জীবনের ৭৬ বছর। জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন করা না হলেও অগুনতি মানুষের শুভেচ্ছা আপ্লুত করেছে তাকে; তাদের ভালোবাসা আর শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে জন্মদিন উদযাপন করলেন তিনি। ১৯৪৬ সালে ৩১ অক্টোবর নীলফামারী জেলায় জন্ম আসাদুজ্জামান নূরের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাম রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। পরে পুরো মনোযোগই দেন নাট্য আন্দোলনে। জন্মদিন কেমন কাটলো জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তো সেভাবে জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করি না। গত বছর ৭৫তম জন্মদিন ছিল বলে আমার সংস্কৃতিকর্মী বন্ধুরা একটি আয়োজন করেছিল। এমনিতে আমি জন্মদিনে কোনো আয়োজন করি না। বাড়ির ভেতরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘরোয়া কিছু হয়। এদিন একটু ভালো রান্না-বান্না হয়। আর অসংখ্য মানুষ শুভেচ্ছা জানাই। এই বিষয়টা ভালোয় লাগে। পেশায় চিকিৎসক স্ত্রী শাহীন আখতার আর দুই সন্তানকে নিয়ে আসাদুজ্জামান নূরের সংসার। এখন মন্ত্রী নেই, তবে সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হয়; তার সঙ্গে অভিনয় ও আবৃত্তির মঞ্চেও সমান সক্রিয়। ক্লান্তিহীন এই ছুটে চলার পেছনে রহস্য কী- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “আনন্দ নিয়ে কাজ করি। তাই ব্যস্ততা আমায় ক্লান্ত করে না।
আসাদুজ্জামান নুরের সাংস্কৃতিক/রাজনৈতিক জীবন
দায়িত্বাধীন অধিকৃত কার্যালয় ১০ অক্টোবর ২০০১ পূর্বসূরী আহসান আহমেদ বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী কাজের মেয়াদ ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ – ৭ জানুয়ারি ২০১৯ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বসূরী হাসানুল হক ইনু উত্তরসূরী কে এম খালিদ বাবু ব্যক্তিগত বিবরণ জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৪৬ (বয়স ৭৬) নীলফামারী, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ জাতীয়তা বাংলাদেশী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দাম্পত্য সঙ্গী শাহীন আখতার মাতা আমিনা বেগম পিতা আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী বাসস্থান ঢাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেশা অভিনেতা অভিনেতা উপস্থাপক রাজনীতিবিদ পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৮) ১৯৭২ সালে তার অভিনয় জীবন শুরু হয় মঞ্চদল “নাগরিক” নাট্য সম্প্রদায়ের সাথে। এই নাট্যদলের ১৫টি নাটকে তিনি ৬০০ বারের বেশি অভিনয় করেছেন। এই দলের দুটি নাটকের নির্দেশনা প্রদান করেছেন, যার মধ্যে দেওয়ান গাজীর কিসসা বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। নূর ১১০টিরও বেশি টেলিভিশন চলচ্চিত্র ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। টেলিভিশনে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫), অয়োময় (১৯৮৮), কোথাও কেউ নেই (১৯৯০), আজ রবিবার (১৯৯৯) ও সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)। রেডিওতে প্রচারিত তার নাটকের সংখ্যা ৫০ এরও অধিক। টেলিভিশনের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল শঙ্খনীল কারাগার (১৯৯২) ও আগুনের পরশমণি (১৯৯৪)। সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এর সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন