কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত coxsbazar Sea Beach নিয়ে কথা বলতেই প্রথমে মাথায় আসে এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। ১২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট অখণ্ড এ সাগর সৈকত দেশী বিদেশি পর্যটকদের উত্তাল ঢেউ এবং মনোমুগ্ধকর সূর্যাস্থের মায়াজালে আবদ্ধ করে রাখে। চলুন জেনে নেই কক্সবাজার ভ্রমণ পরিকল্পনা, যাবার উপায়, থাকবেন কোথায়, কোথায় খাবেন সহ কক্সবাজার ভ্রমণের সকল টুকিটাকি বিষয়।
কক্সবাজার
কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি শহর, মৎস্য বন্দর এবং পর্যটন কেন্দ্র। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার সদর দপ্তর। কক্সবাজার তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত, যা ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। একসময় কক্সবাজার প্যানোয়া নামেও পরিচিত ছিল যার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে হলুদ ফুল। এর আরও একটি প্রাচীন নাম হচ্ছে পালঙ্কি ।
অবস্থান
কক্সবাজার চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৫২ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ৪১৪ কি.মি.। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পর্যটন কেন্দ্র। দেশের রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক এবং আকাশপথে কক্সবাজার যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার অবধি রেললাইন স্থাপনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
ইতিহাস
নবম শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে ১৬১৬ সালে মুঘল অধিগ্রহণের আগে পর্যন্ত কক্সবাজার-সহ চট্টগ্রামের একটি বড় অংশ আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। মুঘল সম্রাট শাহ সুজা পাহাড়ী রাস্তা ধরে আরাকান যাওয়ার পথে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন এবং এখানেই ক্যাম্প স্থাপনের আদেশ দেন। তার যাত্রাবহরের প্রায় একহাজার পালঙ্কী কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা নামের স্থানে অবস্থান নেয়। ডুলহাজারা অর্থ হাজার পালঙ্কী। মুঘলদের পরে ত্রিপুরা এবং আরকান তার পর পর্তুগিজ এবং ব্রিটিশরা এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।
কক্সবাজার নামটি এসেছে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক অফিসারের নাম থেকে। কক্সবাজারের আগের নাম ছিল পালংকি। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধ্যাদেশ, ১৭৭৩ জারি হওয়ার পর ওয়ারেন্ট হোস্টিং বাংলার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তখন হিরাম কক্স পালংকির মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। ক্যাপ্টেন কক্স আরাকান শরণার্থী এবং স্থানীয় রাখাইনদের মধ্যে বিদ্যমান হাজার বছরের পুরোনো সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করেন এবং শরণার্থীদের পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেন কিন্তু কাজ পুরোপুরি শেষ করার আগেই মারা (১৭৯৯) যান। তার পুনর্বাসন অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় কক্স সাহেবের বাজার। কক্সবাজার থানা প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৪ সালে এবং পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত একটি সৈকত। ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) দীর্ঘ এই সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত। তবে ব্রাজিলের ২১২ কিলোমিটার (১৩২ মাইল) দীর্ঘ কাসিনো সমুদ্র সৈকত বিশ্বের প্রথম এবং অস্ট্রেলিয়ার ১৫১ কিলোমিটার (৯৪ মাইল) দীর্ঘ নব্বই মাইল সমুদ্র সৈকত বর্তমানে পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম সৈকত, যদিও অস্ট্রেলিয়ার সৈকতটির কিছু অংশ মনুষ্যসৃষ্ট। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এই সৈকতে আসেন।
পর্যটন আকর্ষণ
পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত অনেক হোটেল, বাংলাদেশ পর্যটন কেন্দ্র নির্মিত মোটেল ছাড়াও সৈকতের নিকটেই রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঁচতারকা মানের হোটেল। এছাড়া এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট। সীমান্তপথে মিয়ানমার (পূর্ব নাম-বার্মা), থাইল্যান্ড, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট। এখানে রয়েছে দেশের একমাত্র ফিস একুরিয়াম। আরও রয়েছে প্যারাসেলিং, ওয়াটার বাইকিং, বিচ বাইকিং, কক্স কার্নিভাল সার্কাস শো, দরিয়া নগর ইকোপার্ক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিমির্ত অসংখ্য স্থাপত্য, ফিউচার পার্ক, শিশুপার্ক এবং অসংখ্য ফোটোসুট স্পট। এখানে উপভোগের জন্য রয়েছে নাইট বিচ কনসার্ট । সমুদ্র সৈকতকে লাইটিং এর মাধ্যমে আলোকিত করার ফলে এখানে রাতের বেলায় সমুদ্র উপভোগের সুযোগও রয়েছে।
কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি স্থানে ৪টি ভাস্কর্য (সাম্পান, স্টার ফিস, রূপচাঁদা, ঝিনুক ভাস্কর্য) স্থাপন করা হয়েছে। কক্সবাজারের হাজার বছরের ঐতিহ্য লালদিঘী, গোলদিঘী ও বাজারঘাটা পুকুর। কক্সবাজারের ঐতিহ্য সংরক্ষণ, সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পর্যটক ও স্থানীয় জনসাধারণের চিত্ত-বিনোদনের জন্য এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ।ওয়াকওয়ে, মসজিদ সংস্কার, স্যুভিনিয়র শপ, কমিউনিটি বিল্ডিং, স্ন্যাক্স বার, ট্যুরিস্ট ডেক্স, ট্যুরিস্ট তথ্য কেন্দ্র, সাইকেল পার্কিং স্ট্যান্ড, সুপরিসর পাবলিক টয়লেট, ল্যান্ডস্কেপিং, এম্পিথিয়েটার, ড্যান্সিং ওয়াটার ফাউন্টেন্ট, লাইব্রেরী ইত্যাদি সহকারে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে পর্যটক এবং স্থানীয় জনগণের জন্য বিনোদনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতি বা নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বাস করে যা শহরটিকে করেছে আরও বৈচিত্র্যময়। এইসব উপজাতিদের মধ্যে রাখাইন সম্প্রদায় প্রধান। কক্সবাজার শহর ও এর অদূরে অবস্থিত রামুতে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে বৌদ্ধ মন্দির। কক্সবাজার শহরে যে মন্দিরটি রয়েছে তাতে বেশ কিছু দুর্লভ বৌদ্ধ মূর্তি আছে। এই মন্দির ও মূর্তিগুলো পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণই বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে বিখ্যাত।
বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
- মুহাম্মদ নুরুল হুদা- বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক
- ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী- রাজনীতিবিদ
- মুহম্মদ নূরুল হুদা- কবি সাহিত্যিক
- মোস্তাক আহমদ চৌধুরী- রাজনীতিবিদ
- সমরজিৎ রায় চৌধুরী- সঙ্গীত শিল্পি (একুশে পদক প্রাপ্ত)
- নূরুল হক- খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা (বীর প্রতিক)
শিক্ষা
এখানকার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো
- পেকুয়া সরকারি মডেল জি এম সি ইনস্টিটিউশন
- ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- কক্সবাজার সরকারি কলেজ
- কক্সবাজার হার্ভাড কলেজ
- কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
- কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ
- কক্সবাজার হাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসা
- সুলতানিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসা উখিয়া কক্সবাজার
- ইলিয়াছ মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়
- মাদ্রাসা -এ- তৈয়বিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া, নুনিয়াছড়া, কক্সবাজার।
কক্সবাজার ভ্রমণের সর্বনিম্ন খরচ কত হতে পারে?
সর্বনিম্ন ১০০ টাকায়ও যাওয়া যায় , যেমন সায়েদাবাদ মোড়ে কোন ট্রাক যদি চট্টগ্রামের দিকে যায় তাকে লিফট দিতে বলেন । তাহলেই তো হয় ।
এখন হিসেব করি , রাত ১০ টার মেল ট্রেনে যাবেন ১২০ টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম। এরপর ৩৫০ টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার
জিয়া গেস্টের দিকে / বারমিজ এরিয়ায় ৪০০/৫০০ তে রুম পাবেন । দুপুরে ভাত মাছ খাবেন ১২০ টাকার নিচে । এরপর ঘুরে ফিরে চলে আসবেন সেম ওয়েতে ।
কক্সবাজার ঘুরতে কেমন খরচ পড়বে ভারতীয় মুদ্রায়?
যেহেতু আমি কক্সবাজারের মানুষ। আমার মানে হয় আমি উত্তরটা দিতে পারব।কক্সবাজারে ঘুরতে আসলে খরচ নেহাত কম নয় আবার বেশিও নয়।তাই একটু চোখ- কান খোলা রাখতে হবে।
ভাড়াঃ ঢাকা থেকে কক্সবাজারের বাস ভাড়া ননএসি ৮০০ এবং এসি ১২০০-২৫০০টাকার মধ্যে।আবার শহরের অভ্যান্তরীন যাতায়ত খরচ যতসামান্য।(১ রূপি =১.৩০ টাকা)
হোটেলঃ কক্সবাজারে থাকার হোটেল সামর্থ অনুযায়ী পেয়ে যাবেন। সাধারন রুম ১০০০ থেকে শুরু হয়। তবে ভালো মানের হোটেল ৪৫০০ টাকা থেকে শুরু৷ পর্যটন মৌসুমে এইসংখ্যাটা অনেক বেড়ে যায়। ভালো হোটেল গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তবে এছাড়াও শতশত হোটেল রয়েছে।
খাবারঃ এখানকার খাবারের দাম বেশি। এখানে আসলে সবাই খাওয়া নিয়ে টেনশনে থাকেন। তবে বেশ কিছু ভালো রেস্টুরেন্ট আছে যাদের দামের সাথে মানের সামঞ্জস্য রয়েছে। যেমন,
সকালের নাস্তার জন্যঃ নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট।
দুপুর বা রাতের খাবারের জন্যঃ পৌষি,কুটুম বাড়ি,রান্না ঘর , ওয়েস্টার্ন প্লাজা ইত্যাদি।
এছাড়াও হালকা খাবারের জন্য রাস্তার পাশে বা সমুদ্র সৈকতে আরও অনেক দোকান পাবেন যেখানে দাম অনেক কম।
কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত বার্মিজ মার্কেট। এখানে সবকিছুই সস্তা। তবে বিদেশি হলে দাম লাগামবীহীন হয়ে যায়।
কক্সবাজারে পরিচিত কেউ থাকলে আপনার জন্য ভালো। সময় থাকলে কক্সবাজারের সাথে সেন্টমার্টিন,ছেড়া দীপ, মহেশখালির বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির,হিমছড়ি,মেরিনড্রাইভ ঘুরে যাবেন। এখানে যাতায়ত খরচ হাতের নাগালেই।
স্বল্প মূল্যে কিভাবে কক্সবাজার ঘুরে আসতে পারি?
কক্সবাজার এ ঘুরতে গেলে ৩ ধরনের খরচ মাথায় রাখবেন
প্রথমঃ যাওয়া – আসা
দ্বিতীয়ঃ খাওয়া ও ঘোরাফেরা
তৃতীয়ঃ হোটেলে অবস্থান করা
আপনি যাওয়া আসার জন্য নন এসি বাস পাবেন ৮০০ টাকা থেকে শুরু, খাওয়া দাওয়ার জন্য সব ধরনের হোটেল পাবেন তাই আপনার বাজেট অনুসারে খেয়ে নিবেন এবং বিচে ঘুরতে কোন টাকার দরকার নেই আসে পাসে যাবার জন্য খুব সহজেই ইজিবাইক বা রিক্সা পেয়ে যাবেন। আর থাকার জন্য প্রতি রাত ৫০০ টাকা থেকে ৮০০০০ টাকার হোটের রয়েছে তাই আপনার বাজেট ও পছন্দ মত হোটেলে থাকতে পারবেন কক্সবাজারে দেখার মত যায়গা হল
- কলাতলী সী বিচ
- সুগন্ধা সী বিচ
- লাবনী সী বিচ
- হিমছড়ি পাহাড়
- ইনানী সী বিচ
- মেরিন ড্রাইভ রোড
- বার্মিজ মার্কেট
- মহেশখালী
- রামু বৌদ্ধ বিহার
- রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড
আমরা একটি ট্রাভেল কোম্পানির মাধ্যমে গিয়েছিলাম নাম কক্স ইম্পিয়ানা তারা খুব ভাল ভাবে আমাদের ট্যৃর অপারেট করিয়েছে তাদের মোবাইল নং 01747–440988
এখানে লাবনী বিচ দেখতে পাবেন
গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ৩ দিনের জন্য কক্সবাজার যাবো। অইখানের হোটেলগুলোতে থাকার জন্য কোনো ঝামেলা হবে নাকি সহজভাবেই থাকা যাবে যেহেতু আমরা এখনো বিয়ে করিনি ইত্যাদি
সবাই ফালতু পরামর্শ দিয়েছে । আসল কথা হলো, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বেড়ানোর জন্য সেরা জায়গা হলো কক্সবাজার । যতদিন খুশি থাকুন, কেউ কোনো প্রশ্নই করবে না । পুলিশ রেইড, ডকুমেন্ট চেক এসব পুরাই ফালতু কথা । কখনোই এসব করে না। ওখানে হোটেলগুলো টিকেই আছে কোনো প্রশ্ন না করার প্রবণতার জন্য । আপনি যাবেন, রুম নিবেন, বউ পরিচয় দিবেন । কেউ জিজ্ঞেস বা ডকুমেন্ট খুঁজবে না । মোটামুটি ভাল মানের অর্থাৎ ৩০০০ টাকার উপরে ভাড়ার হোটেলে তো বিবাহিত কিনা সেটাও জিজ্ঞেস করে না ।
হুদাই কিছু মানুষ ভয় লাগায় । আপনি ও আপনার গার্লফ্রেন্ড যদি ১৮ বছরের উপরে হন, পুলিশেরও কিছু করার ক্ষমতা নাই । বাংলাদেশের আইনে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ একসাথে থাকায় কোনো বাধা নাই । আইনগত ভাবে এই দেশে লিভটুগেদার অবৈধ নয় । আইন জানুন, ভাল থাকুন ।
কক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন অঞ্চল (যার আয়তন ১২০ কিলোমিটার)। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্যে বিখ্যাত কক্সবাজার জেলা চট্রগ্রাম থেকে দূরত্ব ১৫২ কিলোমিটার ও ঢাকা থেকে ৪১৪ কিলোমিটার। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ছাড়াও এইখানে আছে আরও অনেক দর্শণীয় স্থান ও স্থাপনা। বিভিন্ন উপজাতি বা নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাসে বৈচিত্রময় এই জেলার জনপ্রিয় স্থান গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো লাবনী বীচ, সুগন্ধা বীচ, কলাতলি বীচ, হিমছড়ি, ইনানী বীচ, মেরিন রোড, সেন্টমার্টিন, রামু বৌদ্ধ বিহার, মহেশখালী, সোনাদিয়া দ্বীপ, কুতুবদিয়া দ্বীপ ইত্যাদি।
কক্সবাজারের পর্যটন আকর্ষণীয় জায়গা গুলো নামঃ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতঃ (লাবণী পয়েন্ট)
কক্সবাজার শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী পয়েন্ট কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় আছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। সব চেয়ে বেশি আকর্ষণ লাগবে যদি আপনি বিকালবেলায় নয়তোবা সকাল বেলায় যাইতে পারেন, তবে বিকালবেলায় আকর্ষণ বেশি আগে। আপনি চাইলে কলাতলি বীচ দিয়ে নামতে পারেন আর পায়ে হেঁটে হেঁটে সুগন্ধা বীচ দিয়ে শেষ করতে পারেন দেখা। সুগন্ধা বীচের পাশেই পাবেন বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট KFC.
হিমছড়ি
হিমছড়ি কক্সবাজারের ১২ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ভঙ্গুর পাহাড় আর ঝর্ণা এখানকার প্রধান আকর্ষণ। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে বামদিকে সবুজঘেরা পাহাড় আর ডানদিকে সমুদ্রের নীল জলরাশি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করে। বর্ষার সময়ে হিমছড়ির ঝর্ণাকে অনেক বেশি জীবন্ত ও প্রাণবন্ত বলে মনে হয়। হিমছড়িতে পাহাড়ের চূড়ায় একটি রিসোর্ট আছে যেখান থেকে সাগরের দৃশ্য অপার্থিব মনে হয়।অর্থাৎ এখান থেকে সম্পূর্ণ সমুদ্র এক নজরে দেখা যায়। হিমছড়ির প্রধান আকর্ষণ এখানকার ক্রিসমাস ট্রি। সম্প্রতি হিমছড়িতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট।
ইনানী সমুদ্র সৈকত
দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে সৈকত সংলগ্ন আরও অনেক দর্শনীয় এলাকা রয়েছে যা পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণের বিষয়। সৈকত সংলগ্ন আকর্ষণীয় এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনানী সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ২৮ কি.মি দক্ষিণে অবস্থিত। অভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে রাস্তায় মাত্র আধঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। পরিষ্কার পানির জন্য জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্রস্নানের জন্য উৎকৃষ্ট বলে বিবেচিত।
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড
বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে এসেছে আন্তর্জাতিক মানের ফিস অ্যাকুরিয়াম দেখার সুযোগ। এ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সে এ আছে সাগর ও মিঠা পানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ।
দরিয়া নগর
দরিয়া নগর (Doria Nogor) পর্যটন কেন্দ্রটি হচ্ছে পাহাড়, সমুদ্র আর সূর্যের অপূর্ব মিলনস্থল। সমুদ্র সৈকতে সুন্দর মনোরম পরিবেশে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে একটু নিরবিলিতে সমুদ্র দেখতে চাইলে দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকত হতে পারে আদর্শ জায়গা। দরিয়ানগরে উঁচু পাহাড়ের নিচ দিয়ে আঁকাবাঁকা একটি সুড়ঙ্গ পথ আছে, যা শাহেনশাহ গুহা নামে পরিচিত। দরিয়া নগরে সবচেয়ে বড় আকর্ষন প্যারাসেইলিং। কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটকদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিতে শুধুমাত্র দরিয়ানগর সৈকতেই রয়েছে প্যারাসেইলিং করার ব্যবস্থা। বর্তমানে দরিয়ানগরে দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্যারাসেইলিং করা যায়। স্যাটেলাইট ভিশন সি স্পোর্টস প্রতিষ্ঠানটির তিনটি প্যাকেজ আছে, এই প্যাকেজগুলো নিতে আপনাকে যথাক্রমে ১৫০০, ২০০০ ও ২৫০০ টাকা খরচ করতে হবে।
সেন্টমার্টিন
সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, এটি বাংলাদেশের মূলভূখন্ডের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ১৭ বর্গ কিলোমিটারের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন। স্থানীয় ভাষায় সেন্টমার্টিনকে নারিকেল জিঞ্জিরা বলেও ডাকা হয়। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত এ দ্বীপটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে। অসীম নীল আকাশের সাথে সমুদ্রের নীল জলের মিতালী, সারি সারি নারিকেল গাছ এ দ্বীপকে করেছে অনন্য, যা ভ্রমণ পিয়াসী মানুষকে দুর্নিবার আকর্ষনে কাছে টেনে নেয়।
রামু বৌদ্ধ বিহার
আছে দেখার মত অনেক কিছুই। আপনি কতটুকু সময় ব্যয় করবেন বৌদ্ধ মন্দির ও বিহার গুলো দেখার জন্যে তার উপর নির্ভর করেই আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে। দেখার মত ঐতিহ্যবাহী ও উল্লেখযোগ্য মন্দির ও বিহার গুলো হলো উত্তর মিঠাছড়ি ১০০ ফুট বৌদ্ধ মূর্তি, রামু সীমা বিহার, লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার, রাংকূট বৌদ্ধ বিহার, শ্রী শ্রী রামকুট তীর্থ ধাম ও শ্রীকুল পুরাতন বৌদ্ধ বিহার ইত্যাদি। এছাড়া রামু রাবার বাগান থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
কক্সবাজারের থাকার জন্যে রয়েছে শতাধিক হোটেল বা কটেজ
এদের মধ্যে মারমেইড বীচ রিসোর্ট, লং বীচ, কক্স টুডে, হেরিটেজ, হোটেল এলাফ ইন্টারন্যাশনাল, সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রীফ, ইউনি রিসোর্ট, উর্মি গেস্ট হাউজ, ইকরা বীচ রিসোর্ট, অভিসার, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট ইত্যাদি।
বিঃদ্রঃ-আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাল লেগে থাকে তাহলে লাইক,কমেন্ট, শেয়ার করে পাশে থেকে অনুপ্রেরণা যোগাবেন।এবং আরো নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে এসে কমেন্ট করে নিজের জানার ব্যকুলতাকে আরো বেগবান করবেন ধন্যবাদ ।